তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানে বৈদেশিক সাহায্য প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটিতে দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের উদ্যোগে গতকাল সোমবার একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানকে সাহায্য করার জন্য ১০০ কোটি ডলারেরও (১ বিলিয়ন) বেশি অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দাতারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দাতা সম্মেলনে অর্থ সহায়তার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, দেশটির প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য জাতিসংঘ ৬০ কোটি ডলার জরুরি সহায়তার জবাবে কী পরিমাণ অর্থের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা বলা অসম্ভব।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, কয়েক দশকের যুদ্ধ, ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতার পর আফগানরা ‘সম্ভবত তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ের’ মুখোমুখি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন ‘আফগানিস্তানের জনগণের একটি জীবনরেখা প্রয়োজন।’ এ সময় গুতেরেস বলেন, বর্তমানে আফগানিস্তানের আর্থিক ব্যবস্থা খুবই সীমিত। এর ফলে অর্থনীতির বেশ কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে সেখানে কাজ করা যাবে না।
আল–জাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেইস, জেনেভা থেকে জানান, জাতিসংঘের প্রধান আফগানিস্তান বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া দেখে ‘অত্যন্ত সন্তুষ্ট’ ছিলেন।
সোমবারের সম্মেলন শেষে যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়, জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আফগানিস্তানের জন্য ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফ্রান্স।
পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পতনের আগে দেশটি কয়েক শ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা পেয়ে আসছিল। কিন্তু তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সহায়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর চাপ বেড়ে যায়।
গত শুক্রবার আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর সংস্থা বর্তমানে আর্থিক সংকটে রয়েছে। অর্থের অভাবে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের কর্মীদের বেতন পর্যন্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।